সামাজিক শক্তি অর্জন বা এক্টিভিজমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর লিস্ট করলে ১/২ নম্বরে থাকবে সমাজের মানুষের সাথে আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক কেমন এ বিষয়টি। মনে করেন এই এক্টিভিজম ব্যক্তিগত সম্পর্কেরই খেলা।

ধরেন আপনি স্কুলের বাচ্চাদের নাম বললে রিচ কমে যাবে এমন ইস্যু নিয়ে সচেতন করতে চান। এ জন্য আপনি পরিকল্পনা করেছেন স্কুলের ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে ক্যাম্পেইন করবেন। তো আপনার প্রথমেই লাগবে স্কুলের স্যার আরও নির্দিষ্ট করে বললে হেড স্যারের অনুমতি। এখন হেড স্যারের সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো থাকলে আপনি অনুমতি পাবার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাবেন। আপনাকে সন্দেহ করবে না। আরে ওরা কারা, কোত্থুকে এলো ওরা, কি চায় ওরা? ওরা কোনো গনত্বান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সদস্য না তো? এই সন্দেহগুলা করবে না। বা ধরেন আপনি এলাকার পোলাপান নিয়ে বৃক্ষরোপন ক্যাম্পেইন করবেন। আপনার যদি পোলাপানের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকে, তাহলে তাদের দিয়ে সহজে কাজ করাইয়া নিতে পারবেন। না হলে কাজ করানো কঠিন হয়ে যাবে।

এক্টিভিজমের জন্য দরকার পড়বে ফান্ডের। ব্যবসায়ী বা সম্পদশালী মানুষ বা সাধারণ মানুষ যারাই হোক না কেন তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকলে আপনি সহজে ফান্ড পাবেন। আপনাকে সন্দেহ করবে না যে ফান্ডের টাকা দিয়ে আপনি চিইল করে বেড়াবেন।

যেখানে দেখিবে ছাই ঊড়াইয়া দেখ তাই পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন এই স্টাইলে আপনাকে সব শ্রেণীর মানুষদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। তবে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে-

১। এলাকার পোলাপান মানে তরুণ প্রজন্ম, ছাত্র, ইসলামের প্রতি ভালোবাসা আছে কিন্তু মাঝে মাঝে রাস্তা ঘাটে গ্যাঞ্জাম করে বেড়ায় বা একটু টিকটক করে এমন পোলাপানের সাথেও ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। এদের অনেকেই আমার আপনার চাইতেও অনেক ভালো এক্টিভিজম করার সক্ষমতা রাখে। এদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে।

২। শিক্ষক কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ছাত্রদের কন্ট্রোল তাদের হাতে। এবং শিক্ষকরা ছাত্রদের ব্যাপক প্রভাবিত করতে পারেন

৩। টেকাটুকাওয়ালা দান খয়রাত করে বড় দিলওয়ালা মানুষজন

৪। মুরুব্বী, এলাকার গন্যমান্য মানুষজন

৫। মসজিদের ইমাম,খতীব সাহেব এবং সম্মানিত আলেম উলামাগন

৬। যে বিষয়ে ক্যাম্পেইন করতে চান সেই বিষয়ের ভুক্তভোগী মানুষজন। যেমন স্ক্রিন আসক্তি নিয়ে কাজ করতে চাইলে অভিভাবকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। কারণ তাদের সন্তানেরাই এটার ভুক্তভোগী। এখন তাদেরকে বোঝাতে পারলে এবং ভালো সম্পর্ক থাকলে দেখবেন জান প্রাণ দিয়ে আপনাদের সাহায্য করছে।

৭। সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রভাব রাখে এমন মানুষজন। আপনাদের প্রচারণা, ফান্ড সংগ্রহ ইত্যাদির জন্য তারা ব্যাপকভাবে সাহায্য করতে পারবেন। তবে এধরণের মানুষদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা একটু কঠিন।

একজন সংগঠক বা সামাজিক শক্তি অর্জনের জন্য এক্টিভিজম করবেন এমন ব্যক্তির জন্য মানুষদের সাথে মেশা, মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করা খুব প্রয়োজনীয় দক্ষতা। এমন দক্ষতা সম্পর্ক মানুষদের টিমে ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। এবং টিমের সবাই যেন কম বেশী এই দক্ষতা অর্জন করতে পারে সে ব্যাপারে ভালোপরিমান চেষ্টা করতে হবে।

মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সাহায্য পাবার ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা তৈরি হতে পারে যদি তারা ভাবে আপনি তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে তাদেরকে ব্যবহার করবেন তাই। এই প্রশ্ন সহ মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরির বিভিন্ন উপায় নিয়ে ইনশা আল্লাহ্ পরের পোস্টগুলোতে ধারাবাহিকভাবে লেখা হবে।

ফেইসবুকে পোস্ট দেবার সময় আমি সাধারণত দ্রুত লেখি। নতুন করে কিছু বেশী ভাবনা করিনা। আগের চিন্তাভাবনা মাথাতে যা ছিল তাই লেখি। এ কারণে পোস্টের কোনো কিছু অসম্পূর্ণ থাকতে পারে। ভিন্ন এঙ্গেইল থেকে দেখার সুযোগ থাকতে পারে।