হঠাৎ করে কোনো বড় অনুষ্ঠান করার চাইতে নিয়মিত ভিত্তিতে পাঠচক্র করা, দারস,হালাকা, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি শিক্ষামূলক কার্যক্রমের প্রতি বেশি জোর দিতে হবে। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর কাছে কোন আমল সর্বাধিক প্রিয়? তিনি উত্তর দিলেন, ‘যে আমল সর্বদা করা হয়, চাই তা কম হোক।’ (বোখারি : ৬৪৬৫)। আরে এতো অল্প করে করব কেন, আমি তো এর চাইতেও অনেক অনেক বেশী কাজ বা একসাথে অনেকগুলো প্রজেক্ট করার সক্ষমতা রাখি। আমরা অনেকেই আছি অনেক কিছু একসাথে করতে চাই। এবং দিনশেষে আমরা কিছুই করতে পারিনা। কারণ লক্ষ্য অবাস্তব। একজন মানুষ দীর্ঘসময় ধরে এভাবে সিরিয়াস হয়ে কাজ করতে পারে না। লক্ষ্যপূরনে ব্যর্থ হওয়া এবং প্রথম কয়েকদিন অতিরিক্ত প্রেসার নেবার ফলে খুব দ্রুত বার্নআউটের শিকার হই। হতাশ,ক্লান্ত উদ্যোমহীন হয়ে পড়ি।

 প্রথমে টার্গেট অল্প রাখুন। এই অল্প টার্গেটে কাজ করে যান। সফল হলে দেখবেন নিজেদের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করছে। তৃপ্তি পাচ্ছেন। এই তৃপ্তি আপনাকে কাজের পরিমাণ আরও বাড়াতে এবং তাতে ধারাবাহিক থাকতে উৎসাহ দেবে। আগে আপনাকে ছোটো ছোটো ব্যাপারে সফল হতে হবে। এই ছোটো ছোটো সফলতাই আপনাকে বড় সাফল্য এনে দেবে। আমাদের অনেক ভাইদের মধ্যে শুধু বড় বড় প্রোগ্রাম করার প্রবনতা থাকে। কারণ-এর মধ্যে গ্ল্যামর আছে, মানুষকে চমকে দেওয়া যায়, হাইপ তোলা যায়। কিন্তু শুধু বড় প্রোগ্রাম করা সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর। কেন?

 ১. বড় প্রোগ্রাম করতে অনেক টাকা, সময়, পরিশ্রম ও জনবল দরকার। নিয়মিত বড় প্রোগ্রাম করতে গেলে আপনি টাকা দিয়ে কুলাতে পারবেন না, কাজের প্রেসারে আপনার পোলাপান ক্লান্ত বিদ্ধস্ত হয়ে যাবে। এক্টিভিজমের অন্য কোনো কাজ বা পড়াশোনা করার আর শক্তি পাবে না। এভাবে একসময় বার্নআউটের শিকার হয়ে সে কাজ করার উতসাহ হারিয়ে ফেলবে।

২. যদি নিয়মিত প্রোগ্রাম না করে অনেকদিন পর পর প্রোগ্রাম করেন তাহলে মাঝের সময়টাতে আপনার পোলাপানের সাথে কোনো যোগাযোগ থাকবে না, তারা অলস বসে থাকবে। হতাশ হয়ে যাবে।এদিক সেদিক বিভিন্ন জায়গায় চলে যাবে। এক্টিভিজমের কাজে আর তাদের পাবেন না।

 

বড় বড় প্রোগ্রাম যে করবেন না তা নয়। তবে হিসেব করে করতে হবে। টিমের সদস্যদের তৈরি করা, তাদেরকে কাজের প্রতি নিবেদিত আন্তরিক করা, টিমে নতুন নতুন মানুষদের নিয়ে আসা, টিমের সদস্যদের চাঙ্গা রাখাএসবগুলো অর্জনের জন্য নিয়মিত ছোটো ছোটো কর্মসূচী থাকতে হয়। যেমন সাপ্তাহিক পাঠচক্র, ওয়ার্কশপ, রেগুলার দেখা সাক্ষাৎ, চা খাওয়া, ছোটো ছোটো ছোটো ক্যাম্পেইন (এলাকায় কিছু লিফলেট বিতরণ, পোস্টার মারা, ছোটো একটা মিছিল করা)। বিশেষ করে আপনার দলে যারা নতুন সদস্য আসবে তাদের যদি কোনো কাজ না দেন তাহলে তারা অল্পতেই হতাশ হয়ে ভাগবে। সবসময় সবাইকে কোনো না কোনো কাজের মধ্যে রাখতে হবে। যতো ছোটোই হোক না কেন কাজ দিতে হবে