ধরেন আপনার এক বন্ধু মদখোর। রুটিন করে মদ খায়। এবং মাঝে মাঝেই অসুখ বিসুখে ভোগে। মদের টাকা জোগাড় করতেই কুল পায় না, চিকিৎসার টাকা জোগাড় করবে কোন সময়…এমন অবস্থা তার। কাজেই আপনাদের সবাইকেই ভাগাভাগি করেই তার চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়। এই পরিস্থিতি বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। আপনারা আপনাদের বন্ধুকে সাহায্য করেন এ ভেবে নিজেদের মধ্যেও যেমন ভালোলাগা কাজ করে। তেমনি ভাবে আশেপাশের মানুষজনও আপনাদের প্রশংসা করে। আপনারা বন্ধুর সেবা করছেন সবাই ঠিক?

ভুল।

আপনার বন্ধু অসুস্থ হলে অবশ্যই আপনারা তাকে সাহায্য সহযোগিতা করবেন সেটা ঠিক। কিন্তু সেই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হবে কেন সে বারবার অসুস্থ হচ্ছে। সমস্যার গোড়া বা মূল খুজে বের করতে হবে। এখানে আপনার বন্ধু অসুস্থ হচ্ছে কারণ হলো সে মদখোর। তাহলে আপনাদের জন্য সঠিক কাজটি হবে তার চিকিৎসার পাশাপাশি সে যেন মাদকাসক্তি কাটিয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া।

এখন আসেন বন্যা প্রসংগে। আমাদের দেশের মানুষজন বন্যার্তদের জন্য যেভাবে সাহায্য সহযোগিতা করছেন তা ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখে রাখার মতো। আমাদের মানুষেরা বরাবরই এমন। অসহায় দুস্থ নিপীড়িত মানুষের পাশে সব কিছু উজাড় করে দিয়ে আমরা পাশে দাড়াই। রোহিঙ্গা থেকে শুরু করে ২২ এর বন্যা, ফিলিস্তিন , এখনকার বন্যা সব সময় এটা প্রমাণিত। এবং আমরা ভবিষ্যতেও এটা করব ইনশা আল্লাহ। আমরা জাতি হিসেবে এমনই। পরের দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারিনা। কিন্তু এখন বন্যার্তদের সাহায্য করার পাশাপাশি আমাদের এটাও দেখতে কেন বারবার বন্যা হচ্ছে।

উত্তর হলো ভারতের  কারনে এমন হচ্ছে। ভারত  সমস্যার গোড়া। বন্যার্ত মানুষের দুঃখ কষ্ট তখনই দূর করা যাবে যখন এই সমস্যার গোড়ার সাথে বোঝাপড়া করা যাবে।

এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন- ঠিক আছে বুঝলাম ভারত  সমস্যার গোড়া। কিন্তু লিফলেট ক্যাম্পেইন পোস্টার বিতরণ করলে ভারতের  কি এমন হবে?

দেখুন ভারত  

ভারতের  পানি আগ্রাসন সম্পরকে আমরা যদি সবাই বিক্ষোভ করি, রুখে দাড়াই, লিফলেট পোস্টার,বিতরণ ক্যাম্পেইন এসব করি (পোস্টারের লিংক কমেন্টে) ভারত  বিরোধী একটা জনমত গঠিত হবে। প্রকৃত বাংলাদেশীরা জন্মগতভাবেই ভারত বিরোধি হয়। কারণ এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। কিন্তু এই ভারত  বিরোধী জনমতের সম্মিলিত বহিঃপ্রকাশ বিগত ১৬/১৭ বছরে হাসিনার কারণে সম্ভব হয়নি। এখন আমরা যদি এভাবে ভারতের  আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে জনমতের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তাহলে খুব পরিষ্কার বার্তা সবার কাছে পৌছে যাবে। সবাই জানবে বাংলাদেশের জনগন কি চায়। এরফলে-

১। বাংলাদেশের জনগণের উপর ভারতের  আগ্রাসনের চিত্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হাইলাইটেড হবে। ভারতের  উপর আন্তর্জাতিক চাপ আসবে। ডারতে মুসলিমদের নির্যাতন, ইসলাম বিদ্বেষ ইত্যাদি বিষয়গুলো কায়দামতো উপস্থাপন করতে পারলে মধ্যপ্রাচ্য বা গালফ দেশগুলোর মাধ্যমে ভারত কে ব্যাপক চাপে ফেলা যাবে। ভারতের  রেমিট্যান্সের বিপুল অংশ আসে সেখান থেকে। এজন্য টুইটারে আমাদের সম্মিলিতভাবে ক্যাম্পেইন চালাতে হবে

২। সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসতে বাধ্য হবে। অনায্য চুক্তিগুলো বাতিল করে দিবে। কমপক্ষে নতুন করে ভারত কে কোনো সুযোগ সুবিধা দেবার আগে ১০০ বার ভাববে

৩। সরকার, সামরিক বাহিনী বা অন্য কেউ ভারতের  বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেবার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হবে। কারণ তারা জানবে বাংলাদেশের জনগন তাদের পাশে আছে। একডাক দিলে কোটি কোটি মানুষ রক্ত দিতে প্রস্তুত। শুধু একটা ডাকের অপেক্ষা। আর এই পয়েন্টটাই ভারত কে কেমন ভীতির মধ্যে ফেলবে চিন্তা করেন।

৪। ভারতের  এদেশীয় দালাল যেমন প্রথম আলো, ডেইলিস্টার আতংকের মধ্যে পড়বে। ভারতের  দালালী করার আগে দুইবার ভাববে

৫। সীমান্ত! হত্যা সহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করা, ষড়যন্ত্র করতে ভারত  ভয় পাবে। ভারত  সংখ্যালঘু নির্যাতনের গাল গল্প ফেঁদে বহির্বিশ্বে আমাদের ইমেইজ খারাপ করতে পারবে না। বরং আমরাই তাদের দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম, খৃস্টান কিংবা দলিতদের ভয়ংকর নির্যাতনের কাহিনী, ইসলাম বিদ্বেষ আন্তর্জাতিক মহলে উপস্থাপন করে তাদেরকে চাপের মধ্যে ফেলতে পারব ইনশা আল্লাহ। আগের মতো বাংলাদেশকে নিজেদের জমিদারি ভাবতে পারবে না। বাংলাদেশে ভারতের  আগ্রাসনের মাত্রা বহুলাংশে কমে আসবে ইনশা আল্লাহ।

৬। Gen-Z যে সময়ে বেড়ে উঠেছে সে সময় ভারতের  বিরুদ্ধে কিছুই বলা যেত না আগেই উল্লেখ করেছি। আমরা যদি এখন ভারতের  আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্যাম্পেইন করি তারা ভারতের  আগ্রাসন সম্পর্কে সচেতন হবে। ভারত  বিরোধী চেতনার সিলসিলা নিজেদের মধ্যে আত্মস্থ করে নেবে। ৪৭,৭১ সহ ইতিহাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রকৃত ইতিহাস সামনে আসবে। এবং এগুলোই ঠিক করে দেবে এই উপমহাদেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ

ভারত  আমাদের রাজনৈতিক শত্রু নয় বরং …ভারত  আমাদের স্বাধীন অস্তিত্বের শত্রু। ভারতের  সাথে হিসাব না মেলালে আমরা মুক্তি পাব না। আমরা পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর জুলুম থেকে স্বাধীন হতে পেরেছি, ভারত  থেকেও পারব ইনশা আল্লাহ। এটি সামর্থ্যের প্রশ্ন নয়, বরং ইচ্ছার প্রশ্ন.. সেই ইচ্ছা কি আমাদের আছে?