মুহাম্মাদ ৪০ বছরে নবুওয়্যাত পান। মক্কাতে ১৩ বছর দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপর মদীনায় হিজরত করেন। ৬৩ বছর বয়সে উনি আল্লাহর কাছে যান। দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুওয়াতি জীবনের একেবারে শেষের দিকে উনি মক্কা বিজয় করেন। ২৩ বছরের প্রায় পুরোটা সময় উনি অপমান, উপহাস, ক্ষুধা, দারিদ্যতা, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। উনার শরীর রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। প্রিয় সাথীদের নিজ হাতে কবরে শুইয়েছেন। নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। নূহ আলাইহিস সালাম দীর্ঘ ৯৫০ বছর ধরে দাওয়াতি কাজ করেছেন। অল্প কয়েকজন মানুষ উনার দাওয়াত কবুল করেছেন। যে পাগড়িওয়ালাদের নিয়ে আজকে তরুণেরা উল্লাস প্রকাশ করছে, কেন বাংলাদেশে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা হচ্ছে না ভেবে আফসোস করছে, অভিযোগের আংগুল তুলছে তারা প্রায় ৪০ বছরের মতো সংগ্রাম করে, রক্তের পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমান অবস্থানে এসেছেন। আর আমরা তাঁদের মতো কুরবানি করেছি? তাঁদের মতো এতো দীর্ঘ সময় চেষ্টা চালিয়েছি?

না এর কিছুই করিনি। আমরা এক স্বপ্নের মধ্যে আছি। ভাবি ২/৪ টা ফেইসবুক পোস্ট মেরে, কমেন্টে অমুক ভাইয়ের, অমুক দলের পিন্ডি চটকিয়ে, ১/২ টা বই বের করে একবারে দ্বীন কায়েম করে ফেলব। কুইক ফিক্স। কোনো কুরবানি করা লাগবে না। কোনো সময় লাগবে না। কিন্তু বাস্তবতা তো আর এমন না। তাই আমরা কিছুদিন পরেই হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেই। আমরা ভুলে যাই আল্লাহর চিরন্তন সুন্নাহ, দ্বীনের ইতিহাস। আমরা ভুলে যাই অনেক নবী সারাজীবন দাওয়াত দিয়ে গিয়েছেন কিন্তু একজন মানুষও সেই দাওয়াত কবুল করেননি। আমরা ভুলে যাই ইসলামে প্রকৃত বিজয় মানে হাজার হাজার মানুষের ইসলাম গ্রহণ না, বেস্ট সেলার বই এর লেখক হওয়া না, শরীয়া আইন কায়েম করা না। ইসলামে বিজয় মানে হলো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দ্বীনের পথে টিকে থাকা, নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব ঠিকঠাক ভাবে করে যাওয়া।